সাকিবের ক্ষমা চাওয়ার ভিডিওটি দেখে লজ্জা পেলাম। আমার বিরুদ্ধে নব্বই সাল থেকে টানা তিন বছর মৌলবাদী আন্দোলন চলেছিল, আমাকে হত্যা করার জন্য উন্মাদ হয়ে উঠেছিল লাখো মৌলবাদী, নির্বিঘ্নে আমার মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল জিহাদি নেতারা — কই আমি তো একবারও ভাবিনি আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে!
সরকার আমার বিরুদ্ধে মামলা করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল, আমাকে দু’মাস জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্তরীণ থাকতে হয়েছিল, কই একবারও তো মনে হয়নি ক্ষমা চেয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে হবে আমাকে? আমার শুধু মনে হয়েছিল, আমি কোনও অন্যায় করিনি, আমার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। ক্ষমা যদি কারও চাইতেই হয়, ওদের চাইতে হবে আমার কাছে।
সাকিব আল হাসান বিখ্যাত লোক। নিরাপত্তা রক্ষী দ্বারা বেষ্টিত। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সারা দেশের মানুষ তাঁকে ভালোবাসে। এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ভালোবাসেন। একটা লোক সোশ্যাল মিডিয়ায় থ্রেট করল তো উনি একেবারে ‘আমি গর্বিত মুসলমান, আমি পূজা মণ্ডপ উদ্বোধন করিনি, অন্য একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম, পথে এক মিনিটের জন্য মন্ডপে অনেকের অনুরোধে যেতে বাধ্য হয়েছি, নাকে খৎ দিচ্ছি আর যাব না। সবার ওপরে ইসলাম ধর্ম তাহার ওপরে নাই। আমাকে ক্ষমা করে দিন। ‘— এসব বলার কোনও দরকার ছিল না। লোকে বলে নিজের ‘ কল্লা’ বাঁচাবার জন্য বলেছেন, তাঁর দোষ নেই। না, আমি মনে করি না, তাঁর কল্লা নিয়ে সত্যিই কোনও সমস্যা হতো।
তিনি তো আর অভিজিৎ রায় নন, নিরাপত্তা রক্ষী ছাড়া রাস্তায় একা হাঁটেন। তিনি তো হজ্ব করে আসা সাচ্চা মুসলমান, তিনি তো অভিজিতের মতো ইসলামের সমালোচনা করেননি কোনওদিন। তবে কেন জঙ্গি জিহাদির কাছে তিনি মাথা নোয়ালেন? কেউ যদি এখন রাম দা নাচিয়ে বলে তুই আর কোনওদিন ক্রিকেট খেলবি তো তোকে কুপিয়ে মেরে ফেলব, সাকিব কি খেলা ছেড়ে দেবেন? এতদিন খেলেছেন বলে অনুতপ্ত হবেন? ইসলামে তো গান বাজনা নাচা ছবি আঁকা সবই নিষিদ্ধ, খেলা নিষিদ্ধ হতে কতক্ষণ!